মাহফুজ রাজা, স্টাফ রিপোর্টার : কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলায় খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে গেছে নিচে। প্রচণ্ড দাবদাহ, খরা, বৃষ্টিহীনতা ও টিউবওয়েলে পানি না ওঠায় জনজীবন হাঁসফাঁস করছে।
সরেজমিনে উপজেলার সদর ও ছয়টি ইউনিয়ন ঘুরে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেশির ভাগ টিউবওয়েলে পানি উঠছে না।ব্যবহার না হওয়ার কারণে অধিকাংশ টিউবওয়েল এখন যাদুঘরের স্মৃতি চিহ্ন হিসেবে পড়ে আছে। কিছু টিউবওয়েলে পানি উঠলেও এক গ্লাস পানি ওঠাতে অন্তত ৫ মিনিট সময় লাগে। প্রতিবছর ফাল্গুন মাসের মাঝামাঝি থেকে আষাঢ় মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত থাকে এ সমস্যা।এছাড়া ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহারে কোনো নিয়ম মানা হচ্ছে না। এতে চাপ পড়ছে অগভীর নলকূপে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তীব্র দাবদাহে অধিকাংশ পুকুর, খালে পানি শুকিয়ে যাওয়ায় এবং ইরি ধানের মাঠে সেচ কাজে ব্যবহারিত অনুমোদনহীন সাবমারসিবল গভীর নলকূপ ব্যবহারে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে অকেজো হয়ে পড়েছে টিউবওয়েলগুলো। ফলে সুপেয় পানির সংকট বেড়েছে।কেউ কেউ আবার বিভিন্ন উৎস থেকে পানি সংগ্রহ করে ফিটকিরি ও ট্যাবলেট দিয়ে শোধন করে পরিবারের খাবার পানির চাহিদা পূরন করতে বাধ্য হচ্ছেন।
সাহেবের চর গ্রামের গৃহবধূ রুণি বেগম বলেন, টিউবওয়েল ও মোটরে পানি উঠছিল না। চরম বেকায়দায় পড়েছি। পরে টিউবওয়েলকে তারা সিস্টেম করার পর পানি উঠছে। এ কারণে মোটর খুলে ফেলতে হচ্ছে। জল মোটর বসানো ছাড়া উপায় পাচ্ছেন না।
চরকাটিহারী গ্রামের ধনু মিয়া বলেন, আমার বাড়িসহ আশপাশের বাড়িতেও টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। যাদের বাড়িতে জল মোটর আছে, তাদের কোনো সমস্যা নেই। পানি না পেয়ে অনেকেই পাশের গভীর নলকূপ থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করছেন। পর্যাপ্ত পানি না পেয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গৃহস্থালি কাজ করতে।
উপজেলার চরাঞ্চল নদীর তীরবর্তী হলেও এ সময়ে প্রতিবছরই টিউবওয়েলে পানি উঠে না। এ কারণে খাবার পানি পেতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সচেতন মহলের অভিমত একটি জল মোটর বসাতে ২০ হাজার টাকা খরচ হয়। এতে সবাই জল মোটর বসাতে পারছেন না। সরকারিভাবে জল মোটরের ব্যবস্থা করা হলে মানুষ খাবার পানি সঠিকভাবে পেতে পারবেন।